একুশে পা নিউজ ডেস্ক:
ভাই-বোনের সম্পর্কের পবিত্র প্রতীক রাখি বন্ধন (Raksha Bandhan) শুধু একটি উৎসব নয়, এটি ভালোবাসা, স্নেহ ও প্রতিশ্রুতির বন্ধন। প্রতিবছর শ্রাবণী পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় এই বিশেষ দিন, যা ভারতীয় সংস্কৃতিতে এক অটুট ঐতিহ্য বহন করে।
এবার রাখি পূর্ণিমা কবে?
হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, রাখি পূর্ণিমা ২০২৫ পড়েছে ৯ আগস্ট, শনিবার।
- পূর্ণিমা তিথি শুরু: ৮ আগস্ট (শুক্রবার) দুপুর ২:১৩ মিনিট
- পূর্ণিমা তিথি শেষ: ৯ আগস্ট (শনিবার) দুপুর ১:২৫ মিনিট
🔹 উদয় তিথি অনুযায়ী, ৯ আগস্টই রাখি বন্ধন পালনের শ্রেষ্ঠ সময়। তবে চাইলে বোনেরা ৮ আগস্ট বিকেলের আগেই ভাইয়ের হাতে রাখি পরাতে পারেন। মনে রাখবেন, সূর্যাস্তের পর রাখি বাঁধা শাস্ত্রে নিষিদ্ধ।
রাখি বন্ধনের পৌরাণিক কাহিনী
মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণ ও দ্রৌপদীর ঘটনা এই উৎসবের মূল অনুপ্রেরণা। শ্রীকৃষ্ণের হাত কেটে গেলে দ্রৌপদী নিজের শাড়ি ছিঁড়ে রক্ত বন্ধ করেন। প্রতিদানে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন তার সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন। এখান থেকেই রাখি বন্ধনের রক্ষাকবচের ধারণা জন্ম নেয়।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রতীক হিসেবে রাখি বন্ধন উৎসবকে নতুন মাত্রা দেন। তিনি ভ্রাতৃত্ব ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেন রাখি বেঁধে।
রাখি বন্ধনের তাৎপর্য
- রাখি কেবল একটি সুতো নয়, এটি ভাইয়ের জন্য রক্ষাকবচ।
- ভাই প্রতিজ্ঞা করেন, জীবনের যেকোনো পরিস্থিতিতে বোনের পাশে দাঁড়াবেন।
- এই উৎসব ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব ও পারস্পরিক সম্মানের প্রতীক।
রাখি বন্ধনের করণীয় ও বর্জনীয়
যা করবেন—
- রাখি বাঁধার আগে থালায় প্রদীপ, কুমকুম, চন্দন রাখুন।
- ভাইকে পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে বসান।
- মিষ্টি জাতীয় খাবার দিন।
- ইষ্টদেবতার চরণে রাখি অর্পণ করে তারপর ভাইয়ের হাতে বাঁধুন।
যা করবেন না—
- কালো পোশাক পরে রাখি বাঁধা এড়িয়ে চলুন।
- উপহার হিসেবে তোয়ালে, রুমাল বা ধারালো বস্তু দেবেন না।
- রাখি বাঁধার পর কালো রঙের কোনো উপহার দেবেন না।
দেশজুড়ে রাখি বন্ধনের নানা নাম
ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এই উৎসবের ভিন্ন নাম রয়েছে—
- রক্ষাবন্ধন
- শ্রাবণী পূর্ণিমা
- অবনী আবিত্তম
- পবিত্রতা



শেষকথা
রাখি বন্ধন শুধু ভাই-বোনের সম্পর্ক নয়, এটি মানবিকতার উৎসব। ২০২৫ সালে আসুন, আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যের এই রঙে রাঙিয়ে তুলি আমাদের সমাজকে।