❝কোভিড টিকা নিলেই কি বাড়ছে অকালমৃত্যু?❞ অতিমারি পরবর্তী সময়ে গায়ক কেকে, অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা এবং অভিনেত্রী শেফালী জরীওয়ালার মতো তারকাদের আকস্মিক মৃত্যুকে ঘিরে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল বহু মানুষের মনে। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সাম্প্রতিক মন্তব্যে সেই সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছিল। তবে সমস্ত জল্পনায় ইতি টেনে এবার সামনে এল কেন্দ্র, আইসিএমআর ও এমসের যৌথ গবেষণা রিপোর্ট।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, এই ধরনের দাবিগুলি ❝ভুল ও বিভ্রান্তিকর❞। আইসিএমআর এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (NCDC) ২০২৩ সালের মে থেকে অগস্ট পর্যন্ত সময়কালে ১৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৭টি হাসপাতালের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। লক্ষ্য ছিল ১৮-৪৫ বছর বয়সি শারীরিকভাবে সুস্থ ব্যক্তিদের আচমকা মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান।
এই গবেষণার ফলাফল?
💡 স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোভিড টিকার সঙ্গে হৃদ্রোগ বা আকস্মিক মৃত্যুর কোনও সরাসরি যোগ নেই।

কী উঠে এসেছে রিপোর্টে?
- যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই দুর্বল হৃৎপিণ্ড, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন, রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা বা হৃৎপিণ্ডে পেশির দুর্বলতায় ভুগছিলেন।
- ধূমপান ও সারা রাত ধরে অতিরিক্ত মদ্যপান আচমকা মৃত্যুর ঝুঁকি যথাক্রমে ২ ও ৬ গুণ বাড়িয়ে দেয়।
- দুর্বল হৃদ্পিণ্ড থাকলে অতিরিক্ত পরিশ্রম, উত্তেজনা বা নাচ-গানেও মৃত্যু হতে পারে, এমন সম্ভাবনা ৩ গুণ বেড়ে যায়।
- পারিবারিক হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে, কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পরে আচমকা মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি।
প্রতিষেধক আসলে কী করে?
এই গবেষণায় যুক্ত এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন,
❝প্রতিষেধক আসলে শরীরের প্রতিরক্ষাব্যূহকে শক্তিশালী করে। এর সঙ্গে হৃদরোগ বা মৃত্যুর কোনও সরাসরি সংযোগ পাওয়া যায়নি।❞
তাহলে টিকা নিরাপদ?
হ্যাঁ, বর্তমান প্রমাণ বলছে— কোভিড প্রতিষেধক হৃদরোগ বা অকালমৃত্যুর কারণ নয়। বরং প্রতিষেধক সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। কোনও আচমকা মৃত্যুর ঘটনার পিছনে জড়িয়ে রয়েছে ব্যক্তিগত জীবনধারা, পারিবারিক রোগের ইতিহাস ও জীবনযাত্রার ধরন।
📌 সারাংশ:
কোভিড টিকার কারণে অকালমৃত্যু বাড়ছে— এই দাবি বিজ্ঞানভিত্তিক নয়। বরং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রতিটি মানুষের জন্য প্রয়োজনীয়।