নিজস্ব প্রতিবেদন |
রথযাত্রার আগেই এবার বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে জগন্নাথদেবের প্রসাদ। এমন অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পের মাধ্যমে দিঘার বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে রাজ্যজুড়ে। ২৭ জুন রথের দিন, তার আগেই রাজ্যের প্রতিটি জেলার নির্দিষ্ট দোকানগুলিতে তৈরি হবে প্রসাদ—দুধের ক্ষীর দিয়ে বানানো পেঁড়া ও গজা।

প্রসাদ তৈরির কেন্দ্র জয়নগরের বীণাপাণি মিষ্টান্ন ভান্ডার:
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বহুড়ু এলাকার বিখ্যাত বীণাপাণি মিষ্টান্ন ভান্ডার এখন কার্যত এক কর্মশালা। কর্ণধার গণেশ দাস জানালেন, “স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে আমরা দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ক্ষীর ব্যবহার করে পেঁড়া ও গজা তৈরি করছি। সেগুলো রেশন ডিলারদের হাতে তুলে দিচ্ছি প্যাকেট করে।”
দোকানের অভিজ্ঞ কারিগর শান্তনু দাসের কথায়, “দিনরাত এক করে কাজ করছি। কারণ সময়সীমার মধ্যে বিশুদ্ধ প্রসাদ পৌঁছে দেওয়াই এখন প্রধান লক্ষ্য।”

হুগলির চুঁচুড়ায় চলছে সমান উদ্যমে প্রস্তুতি:
চুঁচুড়ার চকবাজারের ‘অমৃতি স্যুইটস’-এর ১২ জন কারিগর দিনরাত কাজ করে চলেছেন জগন্নাথের প্রসাদ তৈরিতে। সেখানে তৈরি হওয়া পেঁড়া-গজা পৌঁছে যাচ্ছে চুঁচুড়া পুরসভার কমিউনিটি হলে, যেখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা প্যাকেজিংয়ের কাজ করছেন।
পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় জানিয়েছেন, “সিসিটিভির মাধ্যমে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করে সুষ্ঠুভাবে কাজ করা হচ্ছে।”
🗣️ প্রসাদ তৈরি নিয়ে কী বলছেন ব্যবসায়ীরা?
স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ী রতন মন্ডল বলেন, “গজা বা পেঁড়ার মতো মিষ্টি একসঙ্গে অনেকটা তৈরি করে রাখলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হতে পারে। তাই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিলি করা হচ্ছে। আমরা গর্বিত যে জগন্নাথদেবের প্রসাদ তৈরির সুযোগ পেয়েছি।”
💬 প্রশাসনের আশ্বাস:
চুঁচুড়ার মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা বলেন, “সকল স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখেই প্যাকেজিংয়ের কাজ চলছে। মানুষের ঘরে ঘরে দিঘার প্রসাদ পৌঁছে যাবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
ধর্মীয় বিশ্বাস, প্রশাসনিক উদ্যোগ এবং সাধারণ মানুষের সহযোগিতার মিলিত রূপ হয়ে উঠছে এবারের রথযাত্রা। শুধু রথের রশিতে নয়, এবার বাংলার ঘরে ঘরে ভাগ হবে ভগবান জগন্নাথের প্রসাদ। এই শুভ উদ্যোগ প্রতিটি মানুষকে এক বন্ধনে বাঁধবে—ভক্তির, শ্রদ্ধার আর ঐক্যের।