এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর নানা তত্ত্ব উঠে আসছে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে। এবার এক নতুন মোড়! প্রাক্তন মার্কিন নৌবাহিনীর পাইলট এবং বিমান বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন স্টিভ শেইবনার এক ভিডিও বিশ্লেষণে জানালেন, এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে Dual Engine Failure বা দ্বিগুণ ইঞ্জিন বিকলের সম্ভাবনা প্রবল।
উল্লেখ্য, আমদাবাদ থেকে ওড়ার ২৭ সেকেন্ডের মধ্যেই ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার Boeing Dreamliner 787। সরকারি তদন্ত শুরু হলেও বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নও উঠে আসছে সামনে।

কী বলছেন ক্যাপ্টেন স্টিভ?
একটি বিস্তারিত ভিডিওয় ক্যাপ্টেন স্টিভ জানান, শুরুতে তিনি ভেবেছিলেন ফ্ল্যাপ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছিল হয়তো। কারণ, কোনো আগুন বা পাখির আঘাতের চিহ্ন দৃশ্যমান ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে পাওয়া ভিডিও দেখে তাঁর অনুমান বদলে যায়।
তিনি বলেন, টেক অফের পরপরই বিমান থেকে RAT (Ram Air Turbine) Deploy হয়—এটি স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে ভিডিও ফ্রেমে। RAT সাধারণত তখনই সক্রিয় হয় যখন বিমানে বিদ্যুৎ ও হাইড্রোলিক সিস্টেম সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যায়।
RAT Deployment মানেই কী ইঞ্জিন বিকল?
RAT Deployment হওয়ার পিছনে তিনটি সম্ভাবনার কথা বলেন ক্যাপ্টেন স্টিভ—
- বড় ধরণের ইলেক্ট্রিকাল সমস্যা,
- হাইড্রোলিক সিস্টেমের বিঘ্ন,
- অথবা দুই ইঞ্জিনই একসঙ্গে বিকল হওয়া।
এই ঘটনার ক্ষেত্রে তিনি মনে করছেন, তৃতীয় কারণটি অর্থাৎ Dual Engine Failure-ই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত। কারণ, RAT বিমানের ডানদিক থেকে বেরোয় এবং তার নির্দিষ্ট আওয়াজ ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে মিলেছে।
যাত্রী কী বলেছিলেন?
বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী বিশ্বাস কুমার রমেশ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, “টেক অফের পর ৫-৭ সেকেন্ডের জন্য মনে হয়েছিল প্লেনটা আটকে গিয়েছে কোথাও। তারপরে সবুজ ও সাদা আলো জ্বলে ওঠে। এবং প্লেনটা যেন জোরে চলার চেষ্টা করছিল—যেমন রাস্তায় গাড়ি আটকে গেলে রেস দিয়ে চালানো হয়।”
এই বিবরণকে ব্যাখ্যা করে ক্যাপ্টেন স্টিভ বলেন, “এইসবই স্পষ্ট ইঙ্গিত RAT Deployment-এর। বিমানের মূল পাওয়ার সাপ্লাই না থাকলে এই ধরনের আলো ও আওয়াজ হয়।”
‘Mayday… No Power’: চূড়ান্ত সংকেত
এই ঘটনাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে পাইলটের ‘Mayday… No Power’ সংকেত। আন্তর্জাতিক পাইলট সংযোগ রেকর্ডে এই SOS বার্তা পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ, বিমানটি বিদ্যুৎ বা ইঞ্জিনশক্তি হারিয়েই ধ্বংস হয়েছে—এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা প্রায় নিশ্চিত।
তদন্তের বর্তমান অবস্থা
দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার জন্য ইতিমধ্যেই স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কমিটিতে থাকছেন আমদাবাদ পুলিশ কমিশনার, ATS বিশেষজ্ঞ, IB-এর স্পেশাল ডিরেক্টর এবং কেন্দ্রীয় ফরেনসিক গবেষকরা।
দুইটি ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা হয়েছে। একটির ডেটা বিশ্লেষণ করে বোঝার চেষ্টা চলছে, ঠিক কী হয়েছিল বিমানটিতে।
এই মুহূর্তে ক্যাপ্টেন স্টিভের ভিডিওর বিশ্লেষণ শুধু রহস্য উন্মোচনের দিকেই নয়, ভবিষ্যতের বিমান নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশ দিতে পারে। তদন্ত চললেও, Dual Engine Failure-এর সম্ভাবনাকে অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
সম্পূর্ণ ভিডিওটি দেখুন-