ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সীমান্ত পরিস্থিতির অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যে তিন মাসের জন্য কড়া নজরদারি জারি করল। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ রবিবার রাজ্যের সমস্ত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একটি জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন এবং রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, খাদ্য সরবরাহ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর বিশেষ নির্দেশিকা দেন।
এই বৈঠকে মূলত সীমান্তবর্তী জেলাগুলি, সুন্দরবনের জলপথ ও উত্তরবঙ্গের আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। দুর্গম এলাকাগুলিতে নিয়মিত টহলদারি, নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা এবং সম্ভাব্য বিপদের মোকাবিলায় প্রস্তুতি জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য ও ওষুধ মজুতের নির্দেশ
রাজ্যের প্রতিটি জেলার খাদ্য গুদামের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কোনও জেলায় খাদ্য ঘাটতি না হয়, সে কারণে পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী আগাম মজুত রাখতে হবে। পাশাপাশি, সমস্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে, যাতে জরুরি অবস্থায় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি না হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া গুজব ঠেকাতে নজরদারি
রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন ও কলকাতা পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়ানো ভুয়ো খবর ও গুজব রুখতে বিশেষ নজরদারি রাখতে হবে। যাতে কোনো গোষ্ঠীগত উত্তেজনা বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।
যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর জোর
রেডিয়ো, মোবাইল ও অন্যান্য জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থার সচলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যেন কোনও পরিস্থিতিতেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়।
নবান্ন জানিয়েছে, এই তিন মাসের সতর্কতা কোনও আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য নয়, বরং বর্তমান সংবেদনশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে একটি কৌশলগত ও আগাম প্রস্তুতি। এর মাধ্যমে রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও খাদ্য সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখাই মুখ্য লক্ষ্য।