কলকাতা, ৭ মার্চ ২০২৫: রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। একদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) ‘খেলা হবে’ স্লোগান, অন্যদিকে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের (SFI) পালটা স্লোগান ‘চালিয়ে খেলা হবে’—এই দুই শিবিরের লড়াই এখন চর্চার কেন্দ্রে। ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের তরজা রাজ্য রাজনীতির নতুন মোড় নিচ্ছে।
কেন এই বিতর্ক?
তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ স্লোগান ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই স্লোগানের সুর ধরেই এবারের লড়াইতে এসএফআইয়ের ‘চালিয়ে খেলা হবে’ স্লোগান নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এসএফআইয়ের দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রেখে তৃণমূল শাসকদল ক্যাম্পাসগুলিকে ক্রাইম সিন্ডিকেটে পরিণত করছে। অন্যদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলছে, বামেরা কেবল মিডিয়ায় প্রচারের আলো পেতে চায়।
এসএফআইয়ের দাবিগুলি কী?
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন—
✅ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
✅ ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।
✅ রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, “২০১৩-১৪ সাল থেকে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের ভোট হয়নি। আইনশৃঙ্খলার কথা বলে নির্বাচনের প্রশ্নকে বারবার ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন—
🔹 “এসএফআইয়ের প্রচারের জন্য এইসব নাটক। বাস্তবে তারা ছাত্র সমাজের জন্য কিছুই করেনি।”
🔹 “বাংলার ছাত্রসমাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে আছে। ভোট হলে তারাই বুঝিয়ে দেবে কার জায়গা কোথায়।”
নির্বাচনের দাবিতে সরব ছাত্র সংগঠনগুলি
বাম ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, যদি ভোট না হয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে তারা। আগামী দিনে যাদবপুর সহ অন্যান্য ক্যাম্পাসে ছাত্রদের আন্দোলন আরও জোরদার হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলছে।
বাংলার ছাত্র রাজনীতি বর্তমানে উত্তাল। ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক চলছেই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্যাম্পাসে ছাত্র আন্দোলন গতি পাচ্ছে। রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে এই স্লোগান যুদ্ধের মাধ্যমে।
শেষ কথা
রাজ্য রাজনীতিতে ‘খেলা হবে’ বনাম ‘চালিয়ে খেলা হবে’ বিতর্ক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটাই দেখার।