অন্ধবিশ্বাসের বলি হচ্ছে শিশুরা! সমাজ কি এখনও জাগবে?
বর্তমানে প্রযুক্তির বিকাশ ঘটলেও সমাজের এক কোণে এখনও জ্বলছে কুসংস্কারের আগুন। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের আড়ালে এখনও ঘটে চলেছে ভয়াবহ কিছু ঘটনা, যা সভ্য সমাজের রীতিনীতি ও মানবিকতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। ঠিক এমনই এক বাস্তব ঘটনাকে উপজীব্য করেই পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিক নির্মাণ করেছেন তাঁর দ্বিতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র ‘চড়ক’। এই ছবিতে ফুটে উঠেছে এক প্রত্যন্ত গ্রামের চড়ক পূজার সময় ঘটে যাওয়া গা শিউরে ওঠার মতো এক কাহিনি, যেখানে ধর্মের নামে শিশু বলি দেওয়া হয়!


চড়কের আড়ালে ভয়াবহ নরবলি! বাস্তব ঘটনাই অনুপ্রেরণা
‘চড়ক’ ছবির কাহিনির মূল কেন্দ্রে রয়েছে এক প্রত্যন্ত গ্রাম। এই গ্রামের মানুষ প্রতি বছর চড়ক পূজার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতি নেয়। সন্ন্যাসীরা উপবাস করেন, মহাদেবের আরাধনায় লিপ্ত থাকেন। কিন্তু আচমকাই গ্রামের দুই শিশু নিখোঁজ হয়ে যায়। তাদের খোঁজ মেলে কয়েকদিন পর—কিন্তু মৃত অবস্থায়!


এলাকার লোকজনের বিশ্বাস, যদি নির্দিষ্ট বয়সের শিশু বলি দেওয়া হয়, তবে প্রচুর ধনসম্পদের অধিকারী হওয়া যায়। এই কুসংস্কারের বলি হয় দুটি শিশু। এই সত্য কাহিনিকে রূপালী পর্দায় তুলে ধরেছেন পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিক। তাঁর মতে, “এখনও ধর্মের নামে অন্ধবিশ্বাস মোছেনি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও এই ধরণের ঘটনা ঘটে, যা সমাজের এক অন্ধকার দিককে প্রকাশ করে।”
শিল্পীদের অভিনয় ও শুটিং লোকেশন
এই ছবিতে বলিউড ও টলিউডের একঝাঁক অভিজ্ঞ অভিনেতা অভিনয় করেছেন।
🔹 বলিউড থেকে রয়েছেন –
✔ শাহিদুর রহমান (‘ভাগ মিলখা ভাগ’ খ্যাত)
✔ শশিভূষণ (‘মির্জাপুর’ খ্যাত)
✔ অঞ্জলি পাটিল (‘নিউটন’ খ্যাত)
🔹 টলিউড থেকে রয়েছেন –
✔ সুব্রত দত্ত
✔ শ্রেয়া ভট্টাচার্য
✔ কৌশিক কর
✔ প্রসূন গায়েন
ছবির বেশিরভাগ শুটিং হয়েছে পুরুলিয়া, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে।


‘চড়ক’ ছবির বার্তা – সমাজের চোখ খুলবে কি?
পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিক জানিয়েছেন, ছবিটির উদ্দেশ্য শুধুমাত্র বিনোদন দেওয়া নয়, বরং সমাজের গভীরে লুকিয়ে থাকা এক ভয়ঙ্কর সত্যকে প্রকাশ করা। এখনো কিছু গ্রামে শিশুবলি ও কুসংস্কারের প্রচলন রয়েছে, যা অত্যন্ত অমানবিক ও নৃশংস।


এই ছবিটি শুধু ভারত নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রদর্শিত হবে বলে জানা গেছে। প্রথমে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মুক্তি পাবে, এরপর কলকাতা-সহ সারা দেশে সিনেমাহলে দেখানো হবে।
এই ছবিটি সমাজের কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দেবে। ধর্মের নামে এ ধরনের নৃশংসতা বন্ধ করার এখনই সময়! আপনি কি এই ছবিটি দেখবেন? আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না!
📌 শেয়ার করুন, সচেতনতা বাড়ান!