৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
টলিউডে ফের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পরিচালকদের অনুরোধ সত্ত্বেও টেকনিশিয়ানরা সহযোগিতার আশ্বাস দেননি, যার ফলে আজ শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে যাচ্ছেন পরিচালকরা। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানসূত্র না মেলায় পরিচালকদের তরফে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরিচালকদের মূল দাবি
সাংবাদিক বৈঠকে পরিচালকদের পক্ষে সুদেষ্ণা রায় লিখিতভাবে দাবি পেশ করেছেন, যেখানে উল্লেখ রয়েছে—
- পরিচালকদের সমস্ত দাবিগুলোর লিখিত উত্তর দিতে হবে। মৌখিক প্রতিশ্রুতির ওপর তাদের আর আস্থা নেই।
- ২০২৪ সালের জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, টেকনিশিয়ানদের ধর্মঘটের ফলে কাজ বন্ধ করা যাবে না—এই নির্দেশ মানা হচ্ছে না।
- ব্ল্যাকলিস্ট করা তিনজন পরিচালকের নাম লিখিতভাবে জানাতে হবে এবং তাদের প্রজেক্ট স্বাভাবিকভাবে চলতে দিতে হবে।
- ভবিষ্যতে কাউকে ব্ল্যাকলিস্ট করা হবে না, তা লিখিতভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
- মৌখিক বা লিখিতভাবে কোনো পরিচালকের কাজ বন্ধ করা যাবে না।
- শুটিংয়ের আগে প্রযোজক বা পরিচালকের তরফে টেকনিশিয়ানদের তালিকা ফেডারেশনকে দেওয়া হবে, তবে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
- পরিচালকেরা নির্ভয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন, শুটিং লিস্ট নিয়ে কোনো সমস্যা হলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। কাজ বন্ধ করা চলবে না।
- কোনো ব্যক্তি বিশেষ নিয়ে সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট গিল্ডের মাধ্যমে ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে, তবে কাজ বন্ধ করা যাবে না।
পরিচালকদের কঠোর অবস্থান
পরিচালকরা জানিয়েছেন, যতক্ষণ না তাদের দাবিগুলো লিখিতভাবে মেনে নেওয়া হচ্ছে, তারা ফ্লোর থেকে সরে থাকবেন। তাঁদের বক্তব্য, সিনিয়র পরিচালকদের যদি কাজ করতেই না দেওয়া হয়, তবে জুনিয়র পরিচালকদের ভবিষ্যৎ কী হবে? মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশও মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিচালকরা।
কীভাবে শুরু হল এই সমস্যা?
ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগেই। পরিচালক সৃজিত রায় সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, তাঁর ধারাবাহিকের শুটিং মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে। টেকনিশিয়ানরা সেট ছেড়ে চলে গেছেন এবং সেটের কিছু অংশ ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এরপর পরিচালকদের আরও কয়েকটি কাজ বাধার মুখে পড়ে। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ও জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ও একই সমস্যার সম্মুখীন হন। ফলে পরিচালকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত তারা ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
টলিউডে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
পরিচালকদের কর্মবিরতির ফলে টলিউডের ধারাবাহিক ও সিনেমার শুটিং কার্যত বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতি দ্রুত না সামলানো গেলে গোটা ইন্ডাস্ট্রি বড় সংকটের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন দেখার, ফেডারেশন কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করে এবং পরিচালকদের দাবি কতটা মানা হয়।
এই ধর্মঘটের ফলে সাধারণ দর্শকেরা কতটা প্রভাবিত হবেন, তা সময়ই বলে দেবে। তবে টলিউডে অচলাবস্থার ফলে বিনোদন জগতে বড়সড় প্রভাব পড়তে চলেছে।