অনেকের চুল প্রকৃতিগতভাবে পাতলা হয়ে থাকে। আবার কিছু মানুষের হরমোনজনিত সমস্যা, জীবনযাত্রার পরিবর্তন বা ভুল পণ্য ব্যবহারের কারণে চুল পড়তে গিয়ে পাতলা হয়ে যায়। তবে চুল পাতলা হওয়ার কারণ যাই হোক, মেকওভার সম্পূর্ণ করতে হেয়ারস্টাইল করা জরুরি, তাই না? আসুন জেনে নিই, পাতলা চুলে কিভাবে স্টাইল করা যায়।
হেয়ারস্টাইল ১: ফ্রন্ট টুইস্ট
যাদের চুল পাতলা, তাদের সামনের চুলের অংশে বেশিরভাগ সময় ভলিউম কম থাকে। যদি আপনারও এমন হয়ে থাকে, তাহলে এই হেয়ারস্টাইলটি ট্রাই করুন। মিডিয়াম থেকে লম্বা লেন্থের চুলের জন্য এই স্টাইল একদম উপযুক্ত।

- প্রথমে চুল ভালোভাবে আঁচড়ে নিন।
- যেকোনো একপাশের সামনের চুলের কিছু অংশ আলাদা করে নিন।
- তারপর ধীরে ধীরে সেই চুল টুইস্ট করতে থাকুন।
- টুইস্ট করা চুলগুলো পেছনে নিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে দিন।
- একইভাবে অন্যপাশের চুলও টুইস্ট করে আটকে দিন।
- পেছনের চুলগুলো দিয়ে হালকা মেসি বান বা খোঁপা করে নিন অথবা ছেড়েই রাখুন।
ব্যস! হয়ে গেল ইজি ও ট্রেন্ডি হেয়ারস্টাইল। যেহেতু আমার চুল পাতলা, তাই আমি এই হেয়ারস্টাইলটি প্রায়ই করি। পাতলা চুলে স্টাইলিং করতে গিয়ে যদি আপনি প্রতিদিন স্ট্রাগল করেন, তাহলে একবার এভাবে ট্রাই করে দেখুন।
হেয়ারস্টাইল ২: কার্লিং
পাতলা ও স্ট্রেইট চুলে ভলিউম আনতে হেয়ার কার্ল করা একটি দারুণ পদ্ধতি। আমি সাজেস্ট করব, চুলে লুজ কার্ল করুন। শুধুমাত্র নিচের অংশটুকু কার্ল করুন, কারণ পাতলা চুলে এভাবে কার্ল করলে চুল দেখতে ভলিউমিনাস ও বাউন্সি লাগে।

- প্রথমে হিট প্রোটেকটিং স্প্রে বা সিরাম ব্যবহার করুন।
- তারপর হেয়ার কার্লার দিয়ে সাবধানে কার্ল করুন।
- কার্ল করার পর যদি আপনার হেয়ার লেন্থ শর্ট হয়, তাহলে চুল ছেড়েই রাখতে পারেন।
- ওয়েস্টার্ন ড্রেস, কামিজ বা শাড়ির সাথে এই হেয়ারস্টাইল করুন; দেখতে ভালো লাগবে।
যদি চুলের লেন্থ মিডিয়াম বা লম্বা হয়, তাহলে কার্ল করার পর লুজ বেণি করে নিতে পারেন। সাধারণ বেণি বা ফ্রেঞ্চ বেণি করতে পারেন। সাধারণ বেণি করলে বেণির প্রত্যেকটি সেকশন আঙুলের সাহায্যে একটু লুজ করে দিন। এই হেয়ারস্টাইল গায়ে হলুদ, বিয়ে অথবা দাওয়াতে অ্যাটেন্ড করার জন্য উপযুক্ত।
হেয়ারস্টাইল ৩: ব্যাক কম্বিং
ব্যাক কম্বিং এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে পাতলা চুলেও সহজে স্টাইলিং করা যায়। এতে ইনস্ট্যান্টলি চুলে ভলিউম আসে।

- প্রথমে সামনের দিক থেকে কিছু চুল আলাদা করে নিয়ে টিজ করুন।
- ফ্রন্ট পাফ না করেও মাঝ বরাবর সিঁথি করে পেছনের চুল হালকা পাফ করুন।
- টিজিং কম্ব নিয়ে মাঝের চুলগুলো ব্যাক কম্ব করা শুরু করুন।
- পাফ করা হলে পেছনে ক্লিপ দিয়ে আটকে নিন।
- সামনে ছেড়ে রাখা চুলগুলো পছন্দমতো স্টাইল করুন (বেণি বা টুইস্ট)।
পেছনের চুল চাইলে ছেড়েও রাখতে পারেন। নিচের দিকে কার্ল করে নিলে দেখতে দারুণ লাগবে। তবে যদি ফরমাল ইভেন্ট হয়, তাহলে পেছনের চুল পনিটেইল করে ফেলুন। এতে স্লিক লুক আসবে এবং দেখতেও স্মার্ট লাগবে। অফিস, মিটিং বা প্রেজেন্টেশনের জন্য এই হেয়ারস্টাইল একদম পারফেক্ট।
বোনাস টিপস: ভলিউম লেয়ার
পাতলা চুলের জন্য ভলিউম লেয়ার ও শর্ট লেয়ার কাট একদম উপযুক্ত। চুলে ভলিউম আনতে সঠিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না যেগুলো চুলকে আরও ফ্ল্যাট ও ফ্রিজি করে দেয়! এছাড়া চুল স্বাস্থ্যকর রাখতে সপ্তাহে অন্তত দু’বার হেয়ার অয়েল ব্যবহার করুন। উইকেন্ডে হেয়ার মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন। যারা পাতলা চুল নিয়ে সমস্যায় আছেন, তাদের জন্য অ্যালোভেরা ও আমলার হেয়ার প্যাক ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।

এইভাবে পাতলা চুলে স্টাইলিং করার জন্য আপনি সহজেই এই তিনটি হেয়ারস্টাইল ট্রাই করতে পারেন এবং নিশ্চিতভাবে দারুণ দেখতে লাগবে!