বর্তমান সময়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেশ বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে ওজন নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব আরো বেশি করে সামনে এসেছে। স্থুলতা থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন- হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ইত্যাদির ঝুঁকি কমাতে জীবনযাপনে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। হারপার্স বাজারের সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধে ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা যে ৮টি পদ্ধতিকে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর বলে চিহ্নিত করেছেন, তা জেনে নিন সংক্ষেপে।
১. প্রতিবার খাবারের আগে ২ গ্লাস জল পান করা
প্রতিদিন প্রতিবার খাবারের আগে ২ গ্লাস জল পান করলে শরীর থেকে জমে থাকা অতিরিক্ত জল বের হয়ে যায়। এতে ওজন দ্রুত কমে এবং শরীর ঝরঝরে থাকে। খাবারের আগে জল পান করলে পেট ভরা অনুভূত হয়, ফলে কম খাওয়া হয়।

২. পেট ফাঁপার সমস্যা দূর করা
যাদের ডেইরি বা গ্লুটেন অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়াও পেট ফাঁপার সমস্যা সৃষ্টি করে এমন খাবারগুলি খাওয়া থেকেও বিরত থাকা উচিত। বিভিন্ন হার্বাল চা খেলে হজম শক্তি বাড়ে এবং শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়া দ্রুত হয়, ফলে অতিরিক্ত ফ্যাট জমার প্রবণতা কমে যায়।

৩. পর্যাপ্ত ঘুম
রাতে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম ওজন নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সঠিক সময়ে আরাম করে ঘুমালে শরীরের স্ট্রেস হরমোন দূর হয়, ফলে মেটাবলিজম বাড়ে এবং ওজন কমা সহজ হয়।

৪. রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খাওয়া
রাতের খাবার ঘুমের ২-৩ ঘণ্টা আগে খাওয়া উচিত। এতে খাবার হজম হয়ে শরীরে ফ্যাট জমার সম্ভাবনা কমে যায়। তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৫. প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা
চিপস, কুকিজ, চকলেট, এবং ফাস্টফুডের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। প্রক্রিয়াজাত খাবারে চিনি, লবণ এবং ফ্যাট বেশি থাকে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের খাবারের পরিবর্তে ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত।

৬. ব্যায়ামের সময় ৪০-২০ পদ্ধতি অবলম্বন
ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যায়ামের সময় ৪০-২০ পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত। এতে ৪০ সেকেন্ড দ্রুত এবং শক্তি দিয়ে ব্যায়াম করতে হয়, তারপর ২০ সেকেন্ড বিরতি নিতে হয়। এভাবে ৪-৬ বার করে ব্যায়াম করতে হবে। এভাবে যে ব্যায়ামগুলো করলে কাজে লাগবে সেগুলো হলো
১ দ্রুত একজায়গায় দৌড়
২ ১৮০ ডিগ্রি স্কোয়াট লাফ
৩ দুই পায়ে পালাক্রমে স্কোয়াট আর সাইড কিক
৪ পুশ আপ
৫ প্ল্যাংক জাম্প

৭. আমিষ এবং ফাইবার বেশি গ্রহণ করা
আমিষ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে। এ ধরনের খাবার হজম হতে সময় লাগে, ফলে পেট ভরা থাকে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।

৮. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং বর্তমানে ওজন কমানোর সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ার অনুমতি থাকে এবং বাকি সময়ে না খেয়ে থাকা হয়। এটি দীর্ঘমেয়াদি ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে।

এটি উল্লেখযোগ্য যে, এই পদ্ধতিগুলি অবলম্বনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।