সলমন খানকে হত্যার হুমকি দিয়ে ত্রাস তৈরি করেছে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। লরেন্স, যে একসময় আইনের ছাত্র ছিল, বর্তমানে এক কুখ্যাত গ্যাংস্টার হিসেবে পরিচিত। পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে বাবা সিদ্দিকী— বহু খুনের ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়েছে, যদিও নিজ হাতে খুন না করেও মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তিনি গ্যাংস্টার জগতের হেভিওয়েট হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে জেলে বসেই তাঁর গ্যাং স্পষ্ট ঘোষণা করেছে যে তাঁদের প্রধান লক্ষ্য সলমন খানকে হত্যা করা।
কিন্তু কেন এত বিদ্বেষ সলমনের প্রতি? কী এমন করেছেন সলমন, যা বিষ্ণোইকে এত ক্রুদ্ধ করেছে?
বিষ্ণোই সম্প্রদায় এবং সলমনের দ্বন্দ্ব বহুদিনের। লরেন্স বিষ্ণোই একজন জাঠ সম্প্রদায়ের সদস্য, যাদের কাছে কৃষ্ণসার হরিণ অত্যন্ত পবিত্র। ১৯৯৮ সালে, ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিং চলাকালীন রাজস্থানে দুটি কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের অভিযোগে সলমন খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল। এই মামলায় প্রাথমিকভাবে সলমনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু এই ঘটনা লরেন্সের মনে গভীর ক্ষোভের জন্ম দেয়।
২০২৩ সালে তিহার জেল থেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, লরেন্স বিষ্ণোই স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তাঁর জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হল সলমন খানকে শেষ করা। তিনি বলেছিলেন, “আমরা কোনও টাকা চাই না। আমরা শুধু চাই সলমন আমাদের সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চান। তিনি কৃষ্ণসার হরিণ শিকার করে আমাদের সম্প্রদায়কে অপমান করেছেন, এবং সেটাই মেনে নিতে পারছি না।”
সম্প্রতি, বাবা সিদ্দিকী হত্যার পর, বিষ্ণোই গ্যাংয়ের একজন সদস্য ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করেছিল যে সলমন খানকে সহায়তার কারণেই সিদ্দিকীকে খুন হতে হলো। বলিউডের এই জনপ্রিয় অভিনেতার জন্যই প্রাণ দিতে হয়েছে তাঁকে।
মুম্বই শহরকে বলা হয় স্বপ্নের শহর, যেখানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বহু কুখ্যাত ডনদেরও স্বপ্নপূরণ হয়েছে। হাজি মস্তান থেকে শুরু করে দাউদ ইব্রাহিম, ছোটা শাকিল, অরুণ গাওলি— এদের আধিপত্যে মুম্বইয়ের রাস্তাগুলি একসময় রক্তাক্ত ছিল। এখন সেই ত্রাস কি আবার ফিরে আসছে? লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ দেখে এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।