সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে প্রবেশ করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা। বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে, বিদ্রোহীদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত সিরিয়ার সরকার, এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ গাজি জালালি। তবে তিনি চান, এই প্রক্রিয়াটি যেন সংঘাতমুক্ত এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।
গত কয়েক দিনে একের পর এক শহর বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাচ্ছে। শনিবার রাত থেকেই দামাস্কাস ঘিরে ফেলে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’। রবিবার সকালেই তারা রাজধানীতে প্রবেশ করে এবং একাধিক সরকারি ভবনের দখল নেয়। সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের চাপ সামলাতে না পেরে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তারা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ একটি বিমানে চড়ে দেশ ত্যাগ করেছেন। তবে তিনি কোথায় গেছেন, তা নিশ্চিতভাবে কেউ জানাতে পারেনি। প্রেসিডেন্টের এই অনুপস্থিতি এবং রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের হাতে চলে যাওয়ায়, প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ গাজি জালালি আত্মসমর্পণের বার্তা দেন।
সংবাদ সংস্থা এপি-র প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী জালালি জানান, “আমি আমার বাড়িতেই আছি। আমি কোথাও পালাইনি। কারণ, এটাই আমার দেশ। আমি আজও অফিসে যাব এবং রোজকার মতো কাজ চালিয়ে যাব।” একই সঙ্গে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার আহ্বান জানান তিনি।
দীর্ঘ ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন শুরু হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো প্রথমে আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালায়। পরবর্তীতে আইএস-এর উত্থান রুখতে নেটো বাহিনীও হামলা চালায়। কিন্তু আজকের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাজধানী দামাস্কাস এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে।
বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ১৩ বছরের যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। বিদ্রোহীদের সামনে সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও সরকারের আত্মসমর্পণের এই পদক্ষেপ আসাদের শাসন ব্যবস্থার পতনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ কোথায় গেলেন এবং সিরিয়ার ভবিষ্যৎ কীভাবে রচিত হবে?