Ad_vid_720X90 (1)
Advertisment
বনেদি বাড়ির পুজোর প্রাচীন রীতি: ১০৮ ঘড়া জল দিয়ে দেবীকে স্নান করানোর বিশেষ প্রথা

বনেদি বাড়ির পুজোর প্রাচীন রীতি: ১০৮ ঘড়া জল দিয়ে দেবীকে স্নান করানোর বিশেষ প্রথা

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, তেহট্ট: গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের কাছে এখনও রয়েছে প্রাচীন তালপাতার পুঁথি, যেখানে লেখা আছে দেবী দুর্গার পুজোর সমস্ত রীতি-নীতি। পুঁথির পাতায় পাতায় মূর্তি তৈরির নিয়ম থেকে শুরু করে মায়ের বোধন এবং বিসর্জনের প্রথার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া রয়েছে। সেই পুঁথি অনুযায়ীই বিগত ২৭১ বছর ধরে তেহট্টের গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার দুর্গাপূজার আয়োজন করে আসছে।

প্রায় ছয় প্রজন্ম আগে, অবিনাশ গঙ্গোপাধ্যায় দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশ পান। সেই স্বপ্নেই দেবীর যে রূপ দেখা যায়, সেই অনুযায়ী দেবীর মূর্তি তৈরি করার আদেশ আসে। সেই থেকে শুরু হয় এই পুজোর, যা প্রথমে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে অনুষ্ঠিত হত। পরে পরিবার তেহট্টে চলে আসে এবং সেখানেই শুরু হয় গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের এই প্রাচীন পুজো।

তালপাতার পুঁথি

প্রতিবছর আষাঢ় মাসে বাঁশ কেটে দেবীর কাঠামো তৈরির প্রস্তুতি নেওয়া হয়। জন্মাষ্টমীর দিন চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ, যা করেন মৃৎশিল্পীরা, যাঁরা বংশপরম্পরায় এই পরিবারের দুর্গামূর্তি তৈরি করে আসছেন। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মাধ্যমে পূজা শুরু হয়। দেবীকে পারিবারিক মূল্যবান অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাজানো হয়। সপ্তমীর রাতে হয় অর্ধরাত্র পুজো।

মাকে এই অস্ত্রগুলি দিয়ে সজ্জিত করা হয়

অষ্টমীর সকালে ১০৮ ঘড়া জল দিয়ে দেবীকে স্নান করানো হয়, যা পুজোর অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ। এরপর “দুর্গা সহস্র শ্লোক” পাঠের মাধ্যমে অষ্টমীর পুজো শুরু হয়। বন্দুকের তোপধ্বনি দিয়ে সন্ধ্যা আরতি হয়, যা এই পরিবারের আরেকটি বিশেষ রীতি। নবমীর দিন মায়ের উদ্দেশ্যে ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয়। এরপর “সপ্তশতী যজ্ঞ” অনুষ্ঠিত হয়, যা নবমীর পুজোকে পূর্ণতা দেয়।

দশমীর দিন মাকে নিয়ম মেনে পুজো করার পর জলঙ্গি নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়।

বর্তমান সময়ে পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় ও সুস্নাত গঙ্গোপাধ্যায় এই পুজোর পরিচালনা করেন। সুস্নাতবাবু জানান, “আমাদের পরিবারে বছরের পর বছর ধরে একই রীতিনীতি মেনেই পুজো হয়ে আসছে। মৃৎশিল্পীরাও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রতিমা তৈরি করে চলেছেন, ঢাকিরাও সেই একই নিয়মে পুজোতে যোগ দেন। তালপাতার পুঁথি অনুসারেই আজও এই পুজো সম্পন্ন হয়।”

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!