দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে বাকি !!

Days
Hours
Minutes
Seconds

প্রখ্যাত তবলা শিল্পী জাকির হুসেনের প্রয়াণে শোকের ছায়া, শ্রদ্ধা জানালেন কারিনা কাপুর, এআর রহমান, নন্দিতা দাস ও অন্যান্যরা

প্রখ্যাত তবলা শিল্পী জাকির হুসেনের প্রয়াণে শোকের ছায়া, শ্রদ্ধা জানালেন কারিনা কাপুর, এআর রহমান, নন্দিতা দাস ও অন্যান্যরা

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: প্রখ্যাত তবলা শিল্পী জাকির হুসেন ৭৩ বছর বয়সে সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে সোমবার, ১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, “ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিস” থেকে সৃষ্ট জটিলতার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পীর প্রয়াণে সারা বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্র ও প্রজন্মের সেলিব্রিটিরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

কারিনা কাপুরের স্মৃতিচারণ
কারিনা কাপুর তাঁর বাবা রণধীর কাপুর এবং জাকির হুসেনের সাথে একটি পুরনো ছবি শেয়ার করেছেন। ছবিটিতে রণধীর কাপুর এবং জাকির হুসেনকে করমর্দন করতে দেখা যায়। কারিনা ছবিটির ক্যাপশনে লেখেন, “মায়েস্ত্রো। চিরকাল।” এবং লাল হৃদয়ের ইমোজি যোগ করেন।

রণবীর সিং-এর স্মরণ
রণবীর সিংও প্রয়াত শিল্পীর একটি হাস্যোজ্জ্বল ছবি শেয়ার করে কিছু ইমোজি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

নন্দিতা দাসের আবেগঘন বার্তা
পরিচালক-অভিনেত্রী নন্দিতা দাসও জাকির হুসেনকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তিনি স্মরণ করেন যে, তাঁর পরিচালিত সিনেমা ‘মন্টো’-র ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরে জাকির হুসেন কাজ করেছিলেন। একাধিক ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, “অবিশ্বাস্য এবং গভীরভাবে দুঃখিত। অপূরণীয় ক্ষতি। এই খবরটা অবিশ্বাস্য লাগে। সর্বদা তাই লাগবে। জাকিরভাই, আপনাকে ভীষণ মিস করব। আপনি খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন।”

তিনি আরও বলেন, “২০১৭-১৮ সালের ছবি ঘাঁটতে গিয়ে ‘মন্টো’-র কাজের স্মৃতি ফিরে এল। একটি ফোন কলেই তিনি সিনেমায় কাজ করতে রাজি হন। আমরা লস অ্যাঞ্জেলেস, মুম্বাই এবং জুম মিটিং-এ কাজ করেছি। আমরা তর্ক করেছি, হেসেছি, কথা বলেছি। তাঁর সাথে কাজ করে শেখার সুযোগ পেয়েছি। কিছু অসমাপ্ত আলোচনা ছিল, যা আবার কখনো হবে না।”

নিত্যা মেননের আবেগপূর্ণ প্রতিক্রিয়া
জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী নিত্যা মেনন বলেন, “আমার একটি আফসোস থাকবে—সেই দিনটি আর আসবে না, যেদিন আমি এই অসাধারণ শিল্পীর লাইভ পারফরম্যান্স দেখতে পাব। তিনি এক বিশেষ আত্মা, যাঁর সৃষ্টিশীলতা ঐশ্বরিক সংযোগে পূর্ণ ছিল। তিনি কখনো নিজেকে খুব গুরুত্ব দিয়ে নেননি। তাঁর সঙ্গীতে যেমন মজা ছিল, তেমনি গভীরতা ছিল যা আমাকে শ্বাস নিতে ভুলিয়ে দিত। এক ধ্রুপদী যন্ত্রে তিনি কৌতুক, বিস্ময় ও মুগ্ধতা একসাথে তৈরি করতে পারতেন।”

বিশাল দাদলানির শোকবার্তা
সঙ্গীত পরিচালক বিশাল দাদলানি লেখেন, “আর কখনোই আরেকজন ‘উস্তাদ জাকির হুসেন’ আসবেন না। আমার আন্তরিক সমবেদনা তাঁর পরিবার, সঙ্গীতজগত এবং সঙ্গীত নিজেকেও।”

এআর রহমানের আবেগঘন প্রতিক্রিয়া
এআর রহমান X-এ লেখেন, “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। জাকির ভাই ছিলেন অনুপ্রেরণা, একজন বিশাল ব্যক্তিত্ব, যিনি তবলাকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আমি দুঃখিত যে আমরা আরও বেশি কাজ করতে পারিনি, যদিও আমরা একটি অ্যালবাম তৈরির পরিকল্পনা করেছিলাম। আপনার অভাব বোধ করব। তাঁর পরিবার এবং বিশ্বজুড়ে তাঁর অসংখ্য ছাত্র যেন এই বিশাল ক্ষতি সহ্য করার শক্তি পান।”

ঋকী কেজ এবং অভিজিৎ ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া
তিনবার গ্র্যামি পুরস্কারজয়ী সঙ্গীতশিল্পী ঋকী কেজ লেখেন, “উস্তাদ জাকির হুসেনের প্রয়াণে স্তম্ভিত, গভীরভাবে শোকাহত ও বিধ্বস্ত। ভারত যে কয়েকজন সর্বশ্রেষ্ঠ সঙ্গীতশিল্পী এবং ব্যক্তিত্ব পেয়েছে, তিনি তাঁদের মধ্যে একজন।”

সঙ্গীতশিল্পী অভিজিৎ ভট্টাচার্য লেখেন, “মহান মায়েস্ত্রো #জাকিরহুসেন… খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন… সম্প্রতি বার্মিংহামে প্রাতঃরাশে তাঁর সাথে দেখা হয়েছিল… শান্তিতে বিশ্রাম নিন, উস্তাদজি।”

জাকির হুসেনের জীবন ও কর্ম
জাকির হুসেন, যাঁকে তাঁর প্রজন্মের সর্বশ্রেষ্ঠ তবলা বাদক হিসেবে গণ্য করা হয়, তাঁর স্ত্রী অ্যান্টোনিয়া মিনিকোলা এবং দুই কন্যা আনিসা কুরেশি ও ইসাবেলা কুরেশিকে রেখে গেছেন। তিনি ১৯৫১ সালের ৯ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন কিংবদন্তি তবলা শিল্পী উস্তাদ আল্লা রাখা। জাকির হুসেনকে ১৯৮৮ সালে পদ্মশ্রী, ২০০২ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০২৩ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মান প্রদান করা হয়।

তাঁর মৃত্যুতে শুধু সঙ্গীত জগত নয়, গোটা বিশ্ব সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে রইল।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
আরও পড়ুন
error: Content is protected !!