১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪: অবশেষে পর্যটকদের জন্য খুলতে চলেছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতির থরকাদহ-দুয়ারসিনি পর্যটন প্রকল্প। সবুজ বনভূমি আর দলমা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই প্রকল্পটি পুজোর আগে, ৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে চলেছে। কলকাতার একটি সংস্থা এই প্রকল্পটি লিজ নিয়ে পরিচালনা করবে।
দলমা পাহাড়ের কোলে শাল, শিমূল, পলাশ, আর কুসুম গাছের ঘন অরণ্যের মধ্যে তৈরি হয়েছে সুন্দর কটেজ। কাছেই বয়ে চলেছে সাতগুড়ুম নদী। প্রকৃতির বুকে বসে এখানে দেখা মিলতে পারে ময়ূরের, ঝাড়খণ্ড থেকে আসা বুনো হাতির, এমনকি নেকড়েও। আর যারা ভাগ্যবান, তারা চিতল হরিণের দর্শনও পেতে পারেন। যারা পুজোর ছুটিতে অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণের স্বাদ নিতে চান, তাদের জন্য এটি হবে এক আদর্শ স্থান।

বান্দোয়ানের বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক রুদ্রাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরই পর্যটকদের জন্য এটি উন্মুক্ত হবে। খুব শীঘ্রই পঞ্চায়েতের পর্যটন পোর্টালে এই প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। যদিও শীতকালে এটি চালু করার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু কাজের ধীরগতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর পুরুলিয়ার দক্ষিণ প্রান্তের পর্যটন সার্কিটের প্রসার আরও বাড়বে।

এই পর্যটন প্রকল্পটি অফবিট অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম হিসেবে তুলে ধরছে বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতি। বনমহলের এই অঞ্চলে বিশেষত বাইক রাইডিং করার জন্য প্রকল্পটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হতে চলেছে। দলেরা পাহাড়ের পাদদেশে শালবন চিরে কালো পিচের রাস্তা ধরে বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা অসাধারণ। তাই থরকাদহ-দুয়ারসিনি প্রকল্পটি ‘হেভেন ফর বাইকারস’ হিসেবে প্রচার করছে প্রশাসন।

বান্দোয়ানকেই বাইকারদের জন্য স্বর্গস্থান হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। এছাড়া এখানে কিছুদিন আগেই ভালু পাহাড়ের কোলে ভিলেজ ট্যুরিজম চালু হয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে আলাদা আকর্ষণ। টটকো জলাধারের আশেপাশে ভ্রমণ অভিজ্ঞতা পর্যটকদের কাছে এক অন্যরকম আনন্দ প্রদান করবে।
আগে যেখানে এই এলাকা মাওবাদী প্রভাবিত ছিল, সেখানে আজ পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটছে। পুরুলিয়ার দক্ষিণ পর্যটন সার্কিটে যুক্ত হয়েছে দক্ষিণ বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, আর ঝাড়খণ্ডের গালুডি ও ঘাটশিলা। তাই দলমা পাহাড়ের পাদদেশে পর্যটকদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। সাথে, এখানকার লোকাল খাবারের মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ থাকবে দুয়ারসিনির বিখ্যাত কড়া পাকের জিলাপি।