২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, কলকাতা: অক্টোবরে আসন্ন পুরীর মন্দির দর্শন কলকাতার বুকে! দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের আগে গড়িয়াহাট মোড় থেকে দেখা যাবে পুরীর জগন্নাথধাম। এই আয়োজন করেছে একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাব। মন্দির দর্শন করে রাস্তা পেরিয়ে একটু এগোলে, আপনাকে নিয়ে যাবে স্মৃতির অতীতে। সিংহি পার্কের ‘সাতমহলার অন্তঃপুর’ আপনার মনে তুলে ধরবে ঘুলঘুলি, চিলেকোঠা এবং পুরনো রাজবাড়ির সিঁড়ির গল্প।
রথযাত্রা কিংবা উল্টো রথ—যখনই সময় পেতেন, একডালিয়া ক্লাবের প্রাণ পুরুষ সুব্রত মুখোপাধ্যায় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে যেতেন। তিনি আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তাঁর উত্তরসূরিরা দুর্গাপুজোর আনন্দকে সজীব রাখতে চান। ৮২তম বর্ষে এবারে একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবে ৯৫ ফুট উচ্চতার জগন্নাথ ধাম দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। তিন মাস ধরে মণ্ডপ সজ্জার কাজ করছে খেজুরির একটি ডেকরেটর। ক্লাব প্রাঙ্গণে ২০-২২ জন শ্রমিক একযোগে কাজ করে চলেছেন পুরীর মন্দিরের আদল তুলে ধরতে।
মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমার শোভায় পুরীর ছোঁয়া থাকছে। পুরীর মন্দির এবং জগন্নাথ, বললাম, শুভদ্রার কোলাজে তৈরি হচ্ছে। পুজোর সাধারণ সম্পাদক স্বপন মহাপাত্র জানান, “স্পনসরশিপের পথে আমরা কখনও হাঁটিনি। রাস্তার মোড়ে হোর্ডিং দিই না। দর্শনার্থীরা আবেগের টানে আমাদের পুজোয় আসেন।”
বাঙালির নস্টালজিক আবেগেই সিংহি পার্কের এবারের নিবেদন ‘সাতমহলার অন্তঃপুরে’। জমিদার বাড়ির দুর্গোৎসবের সূচনা যে সময়ে হয়েছিল, তা এখন বারোয়ারি পুজোতে পরিণত হয়েছে। দুই সময়ের প্রেক্ষাপট এক কোলাজে তুলে ধরেছেন সুদীপ্ত মাইতি, আর আবহ সঙ্গীতের সুর দিয়েছেন পণ্ডিত শুভেন চট্টোপাধ্যায়। প্রতিমার রূপদান করেছেন প্রদীপ রুদ্র পাল।
মণ্ডপে পুরনো দিনের আবহ সঙ্গীত ভেসে আসবে, এবং দেখা যাবে আরাম কেদারা, পুরনো ড্রেসিং-টেবিল ও আলমারি। মণ্ডপের সিঁড়িগুলি মানুষের জীবনের ওঠানামা তুলে ধরবে। প্যান্ডেলের ভিতরের কাজ বেতের তৈরি। প্রায় ৪০ জন কারিগর দু’বেলা কাজ করছেন। পুজোর অন্যতম প্রধান কর্মকর্তা অভিজিৎ মজুমদার বলেন, “এবারের সিংহি পার্কের পুজো একেবারে ভিন্ন, অনেক বেশি নস্টালজিক। এখানে এলে পুরনো দিনের বর্ধিষ্ণু পরিবারের দুর্গাপুজোর স্মৃতি মনে পড়বে।”