নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর ঠিক আগে বইপ্রেমীদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে ‘শারদ বই পার্বণ’। শুক্রবার রবীন্দ্রসদন, নন্দন এবং বাংলা অ্যাকাডেমির চত্বরে এই অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলো। কলকাতা বইমেলার মতো ১০ শতাংশ ছাড়ের পরিবর্তে, এই পার্বণের বিশেষ আকর্ষণ হলো ‘আনলিমিটেড’ ছাড়! পাবলিসার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের দাবি, এখানে ২০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যাবে। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই মেলা, ফলে পাঠকরা এক সপ্তাহ ধরে ডিসকাউন্টে বই কিনতে পারবেন।
গিল্ডের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ। রবীন্দ্রসদন, নন্দন এবং বাংলা অ্যাকাডেমির চত্বরজুড়ে এই পার্বণ শুরু হয়েছে, যেখানে মিলিয়ে মোট ৬০টি স্টল রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে কোনও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়নি। একটি জলের পাত্রে ফুল রেখে অভিনবভাবে মেলার সূচনা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে এবং সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়সহ আরও অনেক অতিথি।
সুধাংশুশেখর দে মন্তব্য করেন, “এই কঠিন সময়ে বইই হতে পারে আলোর ঠিকানা।” সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করে শুধুমাত্র বই বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারণ বইমেলায় ১০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যায়, কিন্তু এখানে ছাড় হবে ২০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানান, “এই পার্বণের মূল আকর্ষণ হলো ছাড়। এখানে প্রাণ খুলে বই কেনার সুযোগ থাকবে।” প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে এই পার্বণ এবং প্রবেশের জন্য কোনও বাধা নেই।
বইমেলার মতো এদিনও নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। পত্রলেখার স্টলে সৈকত নিয়োগীর লেখা ‘হিটলার আর্জেন্টিনায়’ বইটির উদ্বোধন করেন সাহিত্যিক হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত। কোথায় কত শতাংশ ছাড়, সেই তথ্য জানিয়ে বোর্ড বসানো হয়েছে। নির্বাচিত কিছু বইয়ের উপর বেশি ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে কিছু বই মাত্র ১০০ টাকায়ও পাওয়া যাবে। পুরনো বইয়ের পরিবর্তে নতুন বইয়ের উপরও এই ছাড় থাকবে। পত্রলেখা প্রকাশনার গুণেন শীল জানান, “এখানে ২৫ শতাংশ ছাড় তো থাকছেই, কিছু বইয়ের উপর ৫০ শতাংশ ছাড়ও দেওয়া হচ্ছে।”
১৯৯৬ সালের ২৩ এপ্রিল বই দিবস উপলক্ষে শুরু হয়েছিল এই বই উৎসব। পরে, ২০১২ সালে এই বইমেলার সময় পরিবর্তন করা হয় এবং এটি দুর্গাপুজোর আগে আয়োজিত হতে শুরু করে। তখন থেকেই এই মেলার নামকরণ করা হয় ‘শারদ বই পার্বণ’। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে বইপ্রেমীদের জন্য উৎসবের আবহে বই কেনার সুযোগ বাড়ানো হয়।