গৃহসজ্জার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উপাদানগুলোর মধ্যে একটি হলো পর্দা। প্রাচীন যুগে ঘরের গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য পর্দার ব্যবহার করা হতো। তবে বর্তমানে পর্দা শুধুমাত্র গোপনীয়তার জন্যই নয়, এটি ঘরের অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বাড়াতেও ভূমিকা রাখে। সঠিক পর্দা ঘরের চেহারা বদলে দেয়, তাই না? এখন বাজারে নানান ডিজাইন ও থিমের পর্দা পাওয়া যায়, যা ঘরের শোভা আরও অনেকটাই বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম।
পর্দার সঠিক নির্বাচন একটি পুরনো ঘরকেও নতুন ও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। আজ আমরা আলোচনা করবো, কীভাবে সঠিক পর্দা বেছে নেবেন এবং ঘরের লুক পরিবর্তনে কী ধরণের পর্দা উপযুক্ত হতে পারে। পাশাপাশি থাকছে কিছু সহজ টিপসও।
সঠিক পর্দা বাছাইয়ের উপায়
ফ্যাব্রিক নির্বাচন:
ঘরের পর্দা সিলেক্ট করার সময় এর ফ্যাব্রিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ঘরের রং, আকার বুঝে ফ্যাব্রিক নির্বাচন করতে হবে। বর্তমানে বাজারে সুতি, লিলেন, সিল্ক, ভেলভেট, নেট, খাদি সহ বিভিন্ন ধরণের ফ্যাব্রিক পাওয়া যায়।

যদি ঘরে বেশি আলো চান, তাহলে সুতির পর্দা বা লিলেনের হালকা পর্দা নির্বাচন করতে পারেন। এগুলো ওয়াশ করা সহজ এবং আলো বাতাস চলাচলের সুযোগ বাড়ায়। ড্রয়িংরুমে হালকা রঙের কটনের পর্দা ব্যবহার করলে ঘরের আকারও বড় দেখায়। যারা একটু গর্জিয়াস লুক চান, তারা ভেলভেট বা হেভি ফ্যাব্রিকের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন।
রুমের আকার ও রঙের সাথে সামঞ্জস্য:
১) পর্দা কেনার আগে রুমের দেওয়ালের রঙ বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। ডার্ক দেওয়াল হলে হালকা রঙের পর্দা মানানসই হয়। আবার হালকা দেওয়ালে ডিপ কালার বা টু টোনড শেডের পর্দা বেশ মানায়।
২) ছোট আকারের ঘরের জন্য হালকা রঙের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন, এতে ঘর আরও বড় দেখায়। বড় প্রিন্টের পর্দা না দিয়ে ছোট প্রিন্ট বা লম্বালম্বি প্রিন্টের পর্দা দিতে পারেন।
বেডরুমের জন্য স্নিগ্ধ পর্দা নির্বাচন:
১) বেডরুমের জন্য স্নিগ্ধ এবং শান্ত রঙের পর্দা নির্বাচন করুন। বেবি ব্লু, প্যাস্টেল গ্রিন, লাইট পীচ ইত্যাদি রঙের পর্দা বেডরুমে মানানসই।
২) বাচ্চাদের বেডরুমের জন্য হালকা পিংক, ল্যাভেন্ডার বা উজ্জ্বল রঙের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন।

ড্রয়িং ও ডাইনিং রুমের জন্য উপযুক্ত পর্দা:
ড্রয়িং রুমের জন্য গর্জিয়াস এবং ডাবল লেয়ারের পর্দা বেশ জনপ্রিয়। ঘরের আভিজাত্য বাড়ানোর জন্য এসব পর্দার ব্যবহার হতে পারে। যদি ড্রয়িং ও ডাইনিং রুম একসঙ্গে থাকে, তাহলে মাঝখানে নেটের স্বচ্ছ পর্দা ব্যবহার করা যেতে পারে।

পর্দার যত্ন:
১) সাধারণত ৬ মাস অন্তর পর্দা পরিষ্কার করা উচিত। যারা অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন, তাদের আরও ঘনঘন পর্দা পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
২) কটন বা সিনথেটিক ফ্যাব্রিকের পর্দা ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে নিতে পারেন। ভারি পর্দাগুলোর জন্য প্রফেশনাল ক্লিনিং করানো উচিত।
বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ধরণের পর্দা:
গ্রীষ্মকালে হালকা রঙের এবং শীতে গাঢ় রঙের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। উৎসবের জন্য আলাদা ডিজাইনার পর্দাও কিনতে পারেন।

ঘরের শোভা বাড়াতে সঠিক পর্দা নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্দা শুধু ঘরের গোপনীয়তা নয়, এটি ঘরের আভিজাত্য এবং নান্দনিকতা বাড়িয়ে দেয়।