ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো সামরিক অভিযানে অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা। চিকিৎসকরা জানান, গাজার মধ্যাঞ্চলে বোমা হামলার তীব্রতা আরও বেড়েছে। এদিকে, ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে আরও গভীরে প্রবেশ করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের একদিন পরই গাজায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। লেবাননে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাতের অবসান হলেও গাজায় একই ধরনের চুক্তি হওয়ার আশার মাঝেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
লেবাননের সংঘাত সমাধানে বুধবার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা গত ১৪ মাসের লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটায়। গাজার শাসক দল হামাসও যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে ইচ্ছুক বলে ইঙ্গিত দেয়। তবে ইসরায়েল এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নারী আমাল আবু হামিদ বলেন, “আমি আশা করি লেবাননের মতো আমাদেরও যুদ্ধবিরতি হবে। আমি আমার সন্তানদের নিয়ে আমাদের জমি ও ঘরবাড়ি দেখতে যেতে চাই। তারা আমাদের কী করেছে তা দেখাতে চাই। আমি শুধু নিরাপদে থাকতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধের আগে জীবন ছিল সুন্দর। এখন সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছি, পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি। এখন আমাদের কিছুই অবশিষ্ট নেই। খাবারের জন্য পর্যন্ত সংগ্রাম করতে হচ্ছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার লেবাননের চুক্তি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নেবে। তবে, পরিস্থিতি দেখে বোঝা যায়, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর আগ্রহও ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আক্রমণ চালালে প্রায় ১২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। সেই থেকে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৪৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন।