২০২৪ সালের ক্যান্সার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যে, Millennials (১৯৮১-১৯৯৬ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী) এবং Gen X (১৯৬৫-১৯৮০ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী) প্রজন্মের মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশেষ কিছু জীবনযাত্রার অভ্যাস যেমন স্থূলতা এবং অনিদ্রা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। চলুন, বিস্তারিতভাবে জানা যাক এই রিপোর্টের কী বলছে।
ক্যান্সারের ঝুঁকির বৃদ্ধির কারণ
১. স্থূলতা (Obesity)
স্থিতিশীল জীবনের অভ্যাস এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে Millennials ও Gen X-দের মধ্যে স্থুলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থূলতা ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে, যেমন স্তন ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার, এবং কোলন ক্যান্সার। শরীরে অতিরিক্ত মেদ হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করতে পারে এবং যে সমস্ত কোষ দ্রুত বর্ধনশীল তা ক্যান্সার কোষের মতো আচরণ করতে পারে।
২. অনিদ্রা (Sleep Disorders)
অনিদ্রা বা পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকা অনিদ্রার কারণে শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হতে পারে, যা ক্যান্সার সেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এছাড়াও, ঘুমের অভাব স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকির সাথে সম্পর্কিত।
Millennials ও Gen X-এর জীবনযাত্রার প্রভাব
১. প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার
Millennials এবং Gen X প্রজন্ম প্রযুক্তি ও স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে অভ্যস্ত। দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রীনের সামনে বসে থাকা, যা সাধারণত বসে কাজের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, তা স্থুলতার পাশাপাশি শারীরিক কার্যকলাপের অভাবের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
২. খাদ্যাভ্যাস
প্রজন্ম দুটি জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড এবং উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাদ্যের প্রতি আগ্রহী। এ ধরনের খাবার শরীরের অতিরিক্ত মেদ জমাতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
৩. স্ট্রেস এবং মানসিক চাপ
মানসিক চাপ এবং স্ট্রেসও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। চাকরির চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সামাজিক প্রত্যাশা ক্যান্সারের ঝুঁকির সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা
১. স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা
স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে। এটি সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুমের অন্তর্ভুক্ত।
২. স্ক্রীনিং ও রেগুলার চেক-আপ
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ক্যান্সার স্ক্রীনিং গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন ক্যান্সারের পরিবারের ইতিহাস থাকে বা অন্যান্য ঝুঁকি থাকে।
৩. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট
স্ট্রেস কমানোর জন্য মেডিটেশন, যোগব্যায়াম এবং অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যের কার্যকলাপ গুরুত্বপূর্ণ।
শেষ কথা
২০২৪ সালের ক্যান্সার রিপোর্টে Millennials এবং Gen X প্রজন্মের মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধির পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থূলতা এবং অনিদ্রা এই ঝুঁকির মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং নিয়মিত চেক-আপের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব। সময়মতো সচেতনতা এবং প্রতিরোধ কৌশল গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।