কোন পথে নবান্ন অভিযান? কোথায়, কখন জমায়েত? নবান্ন অভিযানে কড়া নিরাপত্তা, ভোগান্তির আশঙ্কা

কোন পথে নবান্ন অভিযান? কোথায়, কখন জমায়েত? নবান্ন অভিযানে কড়া নিরাপত্তা, ভোগান্তির আশঙ্কা

নবান্ন অভিযান প্রতিরোধে সক্রিয় হয়েছে পুলিশ। কলকাতা এবং হাওড়া মিলিয়ে প্রায় ২১ হাজার পুলিশকর্মী মঙ্গলবার রাস্তায় মোতায়েন থাকবেন বলে জানা গেছে। নবান্ন যাওয়ার পথে বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড বসিয়ে নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। এই অভিযানের কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন অংশ। ছাত্র সমাজ জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে জমায়েত শুরু হবে। মূলত দুটি স্থানে জমায়েতের পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেখান থেকে নবান্নের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন আন্দোলনকারীরা।

জমায়েতের স্থান ও যাত্রাপথ

‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ তাদের সমাজমাধ্যমে মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের যাত্রাপথ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে যে, মূলত কলেজ স্কোয়্যার এবং সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ডে জমায়েত করা হবে। এই দুটি স্থান থেকে মিছিল নবান্নের দিকে রওনা দেবে। কলেজ স্কোয়ারের মিছিল সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ধর্মতলা, ইডেন গার্ডেন্স, হেস্টিং হয়ে নবান্নে পৌঁছানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অন্য মিছিলটি সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে নবান্নের দিকে এগোবে।

‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর তরফে সায়ন লাহিড়ী এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর ১টায় কলকাতার কলেজ স্কোয়্যার এবং হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে জমায়েত হবে। এরপর মিছিল নবান্নের দিকে যাবে। যেখানে পুলিশ মিছিল থামাবে, সেখানেই অবস্থান করবে আন্দোলনকারীরা। তবে কত মানুষ জমায়েত হবেন বা কতটি গাড়ি আসতে পারে, সে সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন সায়ন।

নবান্ন অভিযান রুখতে পুলিশের উদ্যোগ

মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের অনুমতি দেয়নি রাজ্য পুলিশ। তারা জানিয়েছে, প্রথমে পুলিশের কাছে কোনও অনুমতি চাওয়া না হলেও সোমবার দুপুরে দুটি ইমেল পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলিতে বেশ কিছু সমস্যার কারণে পুলিশ নবান্ন অভিযানের অনুমতি দেয়নি।

নবান্ন অভিযান রুখতে পুলিশের তৎপরতা চরমে। কলকাতা এবং হাওড়া মিলিয়ে প্রায় ২১ হাজার পুলিশ রাস্তায় থাকবে। নবান্ন যাওয়ার পথে বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেডের দুর্গ বানানো হয়েছে। শুধু বড় রাস্তায় নয়, ছোট গলিতেও ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দান, ফরশোর রোড, এবং লক্ষ্মীনারায়ণতলা এবং মন্দিরতলায় বড় ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছে। নবান্নের আশেপাশের গলির মুখগুলোও ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। থাকছে জলকামান এবং ড্রোনের ব্যবস্থা।

যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা, ভোগান্তির আশঙ্কা

নবান্ন অভিযানের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। রাস্তায় বাস, অটোর মতো যানবাহন খুবই কম চলছে। অফিসযাত্রীরা পথে বেরিয়ে ভোগান্তির মুখে পড়ছেন। বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যে বাসগুলো চলছে, সেগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে। অনেকেই বাস ছেড়ে মেট্রো ধরছেন, তবু গন্তব্যে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়ছেন।

এছাড়াও, শিয়ালদহ স্টেশনেও জমায়েত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই জমায়েত মহাত্মা গান্ধী রোড ধরে কলেজ স্কোয়ারে পৌঁছাতে পারে। কিছু জমায়েত মহাত্মা গান্ধী হয়ে হাওড়া সেতু ধরে নবান্ন পৌঁছানোর চেষ্টাও করতে পারে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, হাওড়া সেতুর আগে মহাত্মা গান্ধী রোড এবং স্ট্র্যান্ড রোডের সংযোগস্থলে এই মিছিলটি আটকানো হবে। তার জন্য সেখানে লোহার গার্ডরেল এবং সিজার ব্যারিকেড থাকবে। হাওড়া সেতুর মুখে অ্যালুমিনিয়ামের ব্যারিকেড এবং কাঠের গুঁড়ি রাখা হচ্ছে।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
আরও পড়ুন
error: Content is protected !!