সম্প্রতি সঙ্গীত জগতে নেমে এসেছে গভীর শোক। প্রয়াত হয়েছেন তবলায় কিংবদন্তি উস্তাদ জাকির হুসেন। তাঁর স্মরণে এবার কলকাতায় আয়োজিত হতে চলেছে দুই দিনের এক বিশেষ শাস্ত্রীয় উৎসব।
আগামী ১১ এবং ১২ জানুয়ারি জি.ডি. বিড়লা সভাঘরে, বিকেল ৫টা থেকে “সম্বন্ধ” আয়োজিত এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উস্তাদ জাকির হুসেনের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানিয়ে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং নৃত্যের বিশিষ্ট শিল্পীরা তাঁদের পরিবেশনার মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ করবেন।
প্রথম দিন অর্থাৎ ১১ জানুয়ারি, পরিবেশনা করবেন শঙ্কর নারায়ণ স্বামী এবং তাঁর সংস্থার শিল্পীরা। এরপর সেতারে পণ্ডিত অসীম চৌধুরী এবং তবলায় পণ্ডিত অরূপ চ্যাটার্জির সুরের মাধুর্য দর্শকদের মুগ্ধ করবে। বিদুষী প্রীতি প্যাটেলের পরিচালনায় মণিপুরী নৃত্যের পরিবেশনা এবং লুনা পোদ্দারের প্রেরণা সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টসের নৃত্য পরিবেশনা বিশেষ আকর্ষণ। এছাড়াও নীলোপা মৈত্রের সম্ভাবনাময় পরিবেশনা নজর কাড়বে।
দ্বিতীয় দিন, ১২ জানুয়ারি, তবলায় থাকছেন পণ্ডিত কুমার বোস, এবং হারমোনিয়ামে পণ্ডিত হিরন্ময় মৈত্র। কণ্ঠসঙ্গীতে কোয়েল দাশগুপ্ত নাহার পরিবেশনা, তবলায় ইমনের তাল, এবং বিদুষী অরুণা মোহান্তির ওড়িশি নৃত্যের বিশেষ উপস্থাপনা থাকবে। এছাড়া ভরতনাট্যম পরিবেশন করবেন মহুল মুখার্জি। দিনটি শেষ হবে লুনা পোদ্দারের নির্দেশনায় “কোয়েস্ট ৯,৫ বীট” পরিবেশনার মাধ্যমে, যা তালের লয় ও গতির বৈচিত্র তুলে ধরবে।
লুনা পোদ্দার, প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী এবং কোরিওগ্রাফার, তাঁর প্রতিষ্ঠান “প্রেরণা সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস”-এর মাধ্যমে শাস্ত্রীয় সংস্কৃতির প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তিনি জানান, “আমাদের লক্ষ্য হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, নৃত্য এবং থিয়েটারের বিভিন্ন রূপকে একত্রিত করে একটি সমৃদ্ধ পরিবেশ তৈরি করা।” এই উৎসবে আলোকসজ্জার দায়িত্বে থাকছেন দীনেশ পোদ্দার।
উস্তাদ জাকির হুসেন, যিনি ১৯৫১ সালে মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন, মাত্র তিন বছর বয়সে তবলায় হাতেখড়ি করেছিলেন। তাঁর সংগীত জীবন বহু সম্মানে সম্মানিত। তিনি পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, এবং তিনবার গ্র্যামি পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর এই কৃতিত্ব ভারতীয় সঙ্গীত জগতে বিরল। গত ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪-এ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।