উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন এমন একটি অবস্থা যা প্রায়শই লক্ষণবিহীন থাকে, কিন্তু এটি শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। আসুন এই নীরব ঘাতক সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানি।
উচ্চ রক্তচাপের সংজ্ঞা
উচ্চ রক্তচাপ হল এমন একটি অবস্থা যেখানে রক্তের চাপ ধারাবাহিকভাবে উচ্চ থাকে। সাধারণত, রক্তচাপের দুটি সংখ্যা থাকে: সিস্টোলিক (উপরের সংখ্যা) এবং ডায়াস্টোলিক (নিচের সংখ্যা)। সিস্টোলিক রক্তচাপ ১২০ মিমি এইচজি এবং ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৮০ মিমি এইচজি হওয়া উচিত। একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ–স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। কারও রক্তচাপের মাত্রা যদি ১৪০/৯০ বা এর চেয়ে বেশি হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে তাঁর উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। অন্যদিকে রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ বা এর আশপাশে থাকে, তাহলে তাকে লো ব্লাড প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয়। যদিও বয়সভেদে রক্তচাপ খানিকটা বেশি বা কম হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপের কারণ
উচ্চ রক্তচাপের অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন:
- অতিরিক্ত ওজন
- অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ
- অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ
- ধূমপান এবং অ্যালকোহল
- বংশগত কারণ
উচ্চ রক্তচাপের বিভিন্ন লক্ষণ:
১। প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করা, মাথা গরম হয়ে যাওয়া ও মাথা ঘোরা
২। ঘাড়ে ব্যথা হওয়া
৩। বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
৪। অল্পতেই রেগে যাওয়া বা অস্থির হয়ে শরীর কাঁপতে থাকা
৫। রাতে ভালো ঘুম না হওয়া
৬। মাঝেমধ্যে কানে শব্দ হওয়া
৭। অনেক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলা
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি
উচ্চ রক্তচাপ দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা, এবং চোখের সমস্যার কারণ হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়

১. দিনে ৫ গ্রামের বেশি লবণ নয়
২. বেশি বেশি ফল ও শাকসবজি খান
৩. মদ্যপান ছাড়ুন
৪. নিয়মিত ব্যায়াম করুন, দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম যথেষ্ট
৫. বাইরের খাবার পরিহার করুন
৬. চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন
৭. দুশ্চিন্তা কমান।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দীর্ঘমেয়াদে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগের চিকিৎসা খুবই জরুরি। চেষ্টা করুন নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার। তাঁর পরামর্শমতো ওষুধ খান। বর্তমান সময়ের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই কম। তাই চিন্তা নেই। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সারা জীবন খেতে হয়। তাই মাঝপথে ওষুধ ছেড়ে দিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না।