স্পেসএক্স: ভারতের জিস্যাট-২০ বা জিস্যাট-এন২ নামে পরিচিত এই স্যাটেলাইটটি এত ভারী যে, ইসরোর নিজস্ব রকেট তা বহন করতে অক্ষম ছিল। তাই প্রথমবারের মতো ইসরো এবং স্পেসএক্সের বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাস্তবায়িত হল।
Liftoff of GSAT-N2! pic.twitter.com/4JqOrQINzE
— SpaceX (@SpaceX) November 18, 2024
মঙ্গলবার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেট ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)-এর জিস্যাট-২০ যোগাযোগ স্যাটেলাইট নিয়ে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করে। প্রায় ৪,৭০০ কেজি ওজনের এই স্যাটেলাইটটি ভারতের যোগাযোগ পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করার জন্য তৈরি। এতে রয়েছে কা-ব্যান্ডের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা, যা ১৪ বছরের মিশন জীবনকাল সহ কাজ করবে।
— Elon Musk (@elonmusk) November 17, 2024
গ্রামীণ এলাকা ও বিমানে ইন্টারনেট পরিষেবায় নতুন দিগন্ত
সফলভাবে কার্যকর হলে এই স্যাটেলাইটটি দেশজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা প্রদান করবে। বিশেষত গ্রামীণ অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ এবং বিমানের মধ্যেই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার ক্ষেত্রে এটি নতুন মাত্রা আনবে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতীয় আকাশসীমায় ইন-ফ্লাইট ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য নিয়মকানুন সহজ করা হয়েছে।
উন্নত প্রযুক্তি ও ভারী স্যাটেলাইট লঞ্চের চ্যালেঞ্জ
জিস্যাট-এন২ স্যাটেলাইটটি ৩২টি ব্যবহারকারী বিমস সহ সজ্জিত, যার মধ্যে রয়েছে ৮টি সরু স্পট বিমস এবং ২৪টি প্রশস্ত স্পট বিমস। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে স্থাপিত হাব স্টেশনগুলির মাধ্যমে এগুলি পরিচালিত হবে।
২০২৪ সালের ৩ জানুয়ারি ইসরোর বাণিজ্যিক শাখা নিউ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড (NSIL) স্পেসএক্সের সঙ্গে তাদের প্রথম বাণিজ্যিক সহযোগিতার ঘোষণা দেয়। এর আগে, ভারত ৪৩০টিরও বেশি বিদেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করলেও, এই স্যাটেলাইটের ভারের কারণে ইসরোর নিজস্ব রকেট তা বহন করতে সক্ষম হয়নি।
স্পেসএক্সের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
ভারতের ভারী স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে এতদিন ইউরোপের আরিয়ানস্পেসের ওপর নির্ভর করতে হত। তবে বর্তমানে তাদের রকেট কার্যকর নয় এবং রাশিয়া ও চীনের সাথে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে স্পেসএক্সই ভারতের কাছে সবচেয়ে উপযুক্ত বিকল্প হয়ে উঠেছে।
ইসরোর সবচেয়ে ভারী লঞ্চ ভেহিকল LVM-3 সর্বোচ্চ ৪,০০০ কেজি ওজনের মহাকাশযান জিওসিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সফার অরবিটে পাঠাতে পারে। তবে বর্তমান চাহিদা এর থেকে বেশি হওয়ায়, ইসরোকে বাইরের সাহায্য নিতে বাধ্য হয়েছে।
এই সফল উৎক্ষেপণ ভারতের মহাকাশ গবেষণায় নতুন অধ্যায় রচনা করল। এটি প্রমাণ করে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আরও উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব।