আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর মহিলাদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা বাড়াতে রাজ্য সরকার ১৭ দফা পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তগুলি শনিবার নবান্নে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে গৃহীত হয়, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এই পদক্ষেপগুলির বিস্তারিত প্রকাশ করেন।
বৈঠকে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, ‘রাত্তিরের সাথী’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা, যা রাতে কর্মরত মহিলাদের জরুরি অবস্থায় নিকটবর্তী থানার সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে। এছাড়া, একটি বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করা হচ্ছে, যা পুলিশ এবং বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সহযোগিতায় রাতে মহিলাদের সুরক্ষা দেবে।
সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে মহিলাদের জন্য পৃথক বিশ্রামকক্ষ, শৌচালয় এবং প্রতিটি তলায় জলের বন্দোবস্ত বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। কর্মস্থলে নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো প্রকার আপস না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এবং প্রত্যেক কর্মীর গলায় পরিচয়পত্র ঝোলানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে কেউ অনুমোদন ছাড়া হাসপাতালে প্রবেশ করতে না পারে।
মহিলা চিকিৎসকদের ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না বলে নির্দেশ জারি করা হয়েছে, যা সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। যেখানে সম্ভব, মহিলাদের রাতের শিফ্ট থেকে মুক্তি দেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, কর্মস্থলে মহিলাদের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা দিতে ‘বিশাখা কমিটি’কে পুনরায় সক্রিয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা এই সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
এই ১৭ দফা পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজ্য সরকার মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যা কর্মক্ষেত্রে তাদের সুরক্ষা এবং কল্যাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।