রাজ্যের আরজি কর-কাণ্ডে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে মুক্তি পায় দুটি বাংলা ছবি—সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় মৃণাল সেনের জীবনীচিত্র ‘পদাতিক’ এবং রাজ চক্রবর্তীর ‘বাবলি’। এই সময়ে বাংলা ছবির দর্শকদের প্রতিক্রিয়া কেমন, তা জানতে চেয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
১৫ অগস্ট মুক্তি পায় এই দুটি ছবি। কিন্তু রাজ্যে চলমান আন্দোলনের কারণে দর্শকের মধ্যে সিনেমা দেখার আগ্রহ তেমন দেখা যায়নি। দ্বিতীয় সপ্তাহে ছবিগুলোর ব্যবসা কীভাবে চলছে, তা নিয়ে কথা বলেন ‘পদাতিক’-এর প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। তিনি জানান, প্রথম সপ্তাহের তুলনায় দ্বিতীয় সপ্তাহে শোগুলির সংখ্যা অর্ধেক করা হয়েছে, তবে দর্শকসংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।
তবে ফিরদৌসুল স্বীকার করেন, আরজি কর-কাণ্ডের আবহে দর্শকেরা সিনেমা হলে আসতে আগ্রহী নন। তিনি জানান, প্রচারের সুযোগ পেলে ছবির অবস্থা আরও ভালো হতে পারত, বিশেষত চঞ্চল চৌধুরী ভারতে এলে ছবির প্রচার অন্য মাত্রায় যেতে পারত।
অন্যদিকে, ‘বাবলি’-র প্রচার বন্ধ রাখেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, কারণ তিনিও নির্যাতিতার ন্যায়ের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু এর পরেও ‘বাবলি’-র একাধিক শো হাউসফুল হয়। রাজ জানান, প্রথম তিন দিনে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে ‘বাবলি’। যদিও তিনি মনে করেন, পরিস্থিতি ঠিক থাকলে ছবির ব্যবসা আরও ভালো হতে পারত।
রাজ্যের ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানের কারণে দর্শক হয়তো ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সিনেমা হলে যেতে পারেননি, এমনটাই মনে করেন রাজ। কিন্তু তিনি এ মুহূর্তে ছবির ব্যবসা নিয়ে চিন্তিত নন। তাঁর মতে, সমাজের পরিস্থিতি উন্নত করতে হবে, তারপরই ছবি নিয়ে ভাবা যাবে।
নন্দন সিনেমা হলে দুটি ছবিই শো পেয়েছে, তবে দর্শকের সংখ্যা কমেছে। স্টার থিয়েটারে প্রথম সপ্তাহে দুটি ছবির শো থাকলেও বর্তমানে ‘বাবলি’ এবং হিন্দি ছবি ‘স্ত্রী ২’ চলছে। জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, বাংলা ছবিকে জায়গা দেওয়ার পরেও খরচ সামলাতে হিন্দি ছবি দেখাতে বাধ্য হচ্ছেন।
দুর্গাপুজোর ঠিক আগে মুক্তি পাওয়া বাংলা ছবিগুলির ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। জয়দীপ মনে করেন, ছবির মুক্তির আগে নির্মাতাদের হল মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত, যাতে ছবির সফর আরও ভালো হতে পারে।
উত্তর কলকাতার স্টার থিয়েটারের মত, আরজি কর-কাণ্ডের প্রভাব যে বাংলা ছবির বক্স অফিসে পড়েছে, তা অস্বীকার করার মতো নয়। এখন দেখার বিষয়, আগামী মাসে বাংলা ছবি মুক্তি পেলে তার ব্যবসা কীভাবে হয়, কারণ এর পরেই পুজোর ছবির মুক্তি!