হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, শঙ্কষ্টি চতুর্থী হল কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্থী তিথিতে পালিত একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যা ভগবান গণেশের প্রতি উৎসর্গ করা হয়। ‘শঙ্কষ্টি’ শব্দের অর্থ হল দুর্দিন বা সংকট থেকে মুক্তি এবং ‘চতুর্থী’ অর্থ হল চতুর্থ তিথি। এই দিনে উপবাস ও পূজা করলে মানসিক শান্তি, সমৃদ্ধি, জ্ঞান এবং শঙ্কাষ্টি চতুর্থী পালনকারীরা জীবনের চতুর্থ অবস্থাকে অর্জন করতে সক্ষম হন।
শঙ্কষ্টি চতুর্থী মানে ‘সরলীকৃত সাফল্য’
হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, পূর্ণিমার পর ও অমাবস্যার পর চতুর্থ দিনটি চতুর্থী তিথি হিসাবে পরিচিত। দুটি চতুর্থী বিশেষত পালন করা হয় – বিনায়ক চতুর্থী ও শঙ্কষ্টি চতুর্থী। যদি শঙ্কষ্টি চতুর্থী মঙ্গলে পড়ে, তবে সেটি আঙ্গারকি চতুর্থী নামে পরিচিত। ভারতজুড়ে এই উৎসবটি মহাসমারোহে উদযাপিত হয়। তামিলনাড়ুতে একে সংকটহারা চতুর্থী বলা হয়।
বিনায়ক চতুর্থী, যা গণেশ চতুর্থী নামেও পরিচিত, ভাদ্রপদ মাসের চতুর্থীতে শুরু হয়। গণেশের মূর্তি স্থাপন, বৈদিক মন্ত্র, উপবাস ও প্রার্থনা করে এই উৎসব পালিত হয়, যা প্রায় ১০ দিন ধরে চলে।
শঙ্কষ্টি চতুর্থীর তাৎপর্য
শঙ্কষ্টি চতুর্থীতে ভগবান গণেশ জীবনের সব বাধা দূর করেন এবং তাঁর উপাসককে জ্ঞান, সুখ ও সমৃদ্ধিতে আশীর্বাদ প্রদান করেন। গণেশকে বুদ্ধি, ন্যায় ও জ্ঞানের প্রতীক হিসাবে গণ্য করা হয়। এই কারণে, শঙ্কষ্টি চতুর্থী উপবাস ও পূজা করলে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ হয়।
বিশ্বাস করা হয়, যদি কেউ পবিত্র হৃদয় নিয়ে এই দিনে গণেশের কাছে প্রার্থনা করে, তবে তাঁর সকল ইচ্ছা ও স্বপ্ন পূর্ণ হয়। এই কারণে শঙ্কষ্টি চতুর্থী উপবাস পালন অত্যন্ত ফলপ্রসূ বলে মনে করা হয়। এই দিনটি বিশেষ করে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এই দিনে মহাদেব তাঁর পুত্র গণেশকে সকল দেবতার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
শঙ্কষ্টি চতুর্থীর আচার ও রীতি
- দম্পতিরা একসঙ্গে উপবাস করে ভগবানের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
- ভক্তরা ভোরবেলা উঠে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করেন।
- পরিষ্কার স্থানে ভগবান গণেশের মূর্তি স্থাপন করা হয়।
- সতেজ ফুল ও দুর্বা ঘাস গণেশকে নিবেদন করা হয়।
- মদক ও লাড্ডুর মতো প্রসাদ ভগবানের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয়।
- চাঁদ দেখা দেওয়ার পর সন্ধ্যায় পূজা করা হয়।
- পূজা গণেশ মন্ত্র পাঠ ও ব্রতকথা পাঠ দিয়ে সম্পন্ন হয়।

শঙ্কষ্টি চতুর্থীতে উপবাস
পরিবারের মঙ্গল কামনায় শঙ্কষ্টি চতুর্থীতে উপবাস পালন করা হয়। ভক্তরা সারা দিন উপবাস করে, সন্ধ্যায় গণেশ পূজার পর চন্দ্রদেবকে দর্শন করে তাঁকে নিবেদন করেন। কিছু নির্দিষ্ট খাদ্য সামগ্রী খাওয়া যায় উপবাসের সময়, যেমন:
- সাবুদানার খিচুড়ি
- তাজা ফল
- লবণবিহীন চিপস
- চিনাবাদাম
- আলুর প্রস্তুত খাবার
শুভ শঙ্কষ্টি চতুর্থী!