১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ : বড় উঠোনে রাখা দুর্গা প্রতিমার কাঠামো। মাটির প্রলেপ পড়তে শুরু করেছে। এরই মাঝে বোঝা যাচ্ছে, দুর্গাপুজোর আয়োজন পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। শহরের অন্যান্য বনেদি বাড়ির মতো দর্জিপাড়ার মিত্রবাড়িতেও (Bonedi Barir Durga Puja) একই প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে। তবে ২১৮ বছরের পুরনো এই পুজো এখনও তার বিশেষ নিয়মের জন্যে ব্যতিক্রমী রয়ে গেছে।
রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজো সম্পন্ন হয়। তারপর থেকে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। মিত্রবাড়িতে আজও পুরনো ছাঁচে প্রতিমা তৈরি হয়। কুমোরটুলি থেকে আসে ডাকের সাজসজ্জা।
প্রতিপদে হয় দেবীর বোধন। সপ্তমী থেকে নবমী অবধি কুমারী পুজোর আয়োজন হয় এই বাড়িতে। অষ্টমীতে সন্ধিপুজোর সঙ্গে পালন করা হয় কল্যাণী পুজো। যেখানে সাধারণত ১০৮টি পদ্মফুল ব্যবহৃত হয় সন্ধিপুজোয়, সেখানে মিত্রবাড়িতে ১০৮টি অপরাজিতা ফুল দিয়ে সন্ধিপুজো সম্পন্ন হয়। নবমীতে অনুষ্ঠিত হয় হোম ও প্রদক্ষিণ। দশমীর দিন কনকাঞ্জলি দিয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। আজও পরিবারের পুরুষরা ধুতি পরে, হাতে ছড়ি নিয়ে প্রতিমাকে কাঁধে করে নিয়ে নিরঞ্জনের জন্য যান।
একসময় প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর নিয়ম ছিল, যা এখন আর পালন করা হয় না। বিসর্জনের পর মা দুর্গার আসনে বসেন বাড়ির মহিলারা, এবং তাঁরা প্রার্থনা করেন যেন এইভাবে শক্তির সঞ্চার ঘটে।
মিত্রবাড়ির ভোগের তালিকায়ও রয়েছে ভিন্নতা। রোদে শুকানো মুগডাল দিয়ে তৈরি করা খিচুড়ি এখানকার ভোগের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়াও থাকে ভাজা সবজি। মাখনের নৈবেদ্য এই বাড়ির বিশেষত্ব, যা এখনও প্রতিমাকে নিবেদন করা হয়।