০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: গণেশ চতুর্থীর আগমনের আর মাত্র এক মাস বাকি। তার আগে ভাদ্র মাসের চতুর্থীতে দেব গণেশের আগমন। একসময় শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রসহ কয়েকটি রাজ্যে সাড়ম্বরে উদযাপন করা হতো গণেশ পুজো, কিন্তু এখন বাংলার প্রাঙ্গণেও তা বিশাল আকারে পালন হচ্ছে। গত কয়েক বছরে বাংলার শহর এবং গ্রামে গণেশ পুজোর প্রচলন বেড়েছে। শিলিগুড়ি থেকে মেদিনীপুর—সর্বত্রই এখন গণেশ পুজোর প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। কুমোরটুলি এবং কালীঘাটের পটুয়াপাড়াতেও এখন তৈরি হচ্ছে বড় ছোট নানা আকারের গণেশ প্রতিমা। উত্তর কলকাতার স্বপন পাল এবং দক্ষিণ কলকাতার অরুণ পালের স্টুডিওতে বিশাল মূর্তি তৈরি হচ্ছে, যার উচ্চতা ১২ থেকে ১৬ ফুট। দুর্গাপুজোর ব্যস্ততার মধ্যেও গণেশ প্রতিমার জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদা মৃৎশিল্পীদের জন্য বাড়তি আয়ের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গণেশ পুজোকে কেন্দ্র করে মিষ্টির দোকানগুলিতেও ব্যস্ততা তুঙ্গে। ভবানীপুরের বিখ্যাত জামনগর সুইটসের মালিক সাগর ব্যাস জানালেন, ‘‘এ বছর আমরা ১০০’রও বেশি ধরণের মোদক তৈরি করেছি। খোয়া ক্ষীর থেকে শুরু করে ড্রাই ফ্রুটস দিয়ে বানানো নানা ফ্লেভারের মোদক রয়েছে। পাঁচ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে এগুলি।’’ এ বছর বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে পাঁচ কেজি ওজনের বিশাল আকৃতির মোদক, যা গণেশকে নিবেদন করা হবে। এই মোদকে ব্যবহার করা হয়েছে এক কেজি কিসমিস, কাজু, এবং অন্যান্য শুকনো ফল।

শুধু কলকাতার বাজারেই নয়, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, উত্তরবঙ্গ এমনকি রাঁচি ও জামশেদপুরেও পাঠানো হয়েছে এখানকার তৈরি মোদক। কলকাতার কুমোরটুলির গণেশ প্রতিমার সঙ্গে পৌঁছেছে দক্ষিণ কলকাতার বিখ্যাত মিষ্টির দোকানের মোদক। শুধু অবাঙালি দোকান নয়, বহু বাঙালি মিষ্টির দোকানও এখন গণেশ পুজোর জন্য মোদক তৈরি করছে। ক্ষীরের মোদকের পাশাপাশি ছানার তৈরি মোদকও বেশ জনপ্রিয়। গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে ছানার মোদক তৈরি করা হলেও, এবার সেই মোদকের চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে, মিষ্টির দোকানগুলো অনেক বেশি পরিমাণে তা প্রস্তুত করছে।
বিগত কয়েক বছরে বাংলার মাটিতে গণপতি বাপ্পার আরাধনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কুমোরটুলি এবং মিষ্টির দোকানগুলোই তার প্রমাণ বহন করছে, যেখানে গণেশের মূর্তি থেকে শুরু করে নানান আকারের মোদক শোভা পাচ্ছে।
4o